সেদিনের পর আর কখনো স্ত্রীকে নিয়ে শপিংয়ে যাননি রুবেল

চলচ্চিত্রে নামা’র পর একবারই স্ত্রীকে নিয়ে ঈদের কেনাকা’টা করতে নিউমা’র্কে’টে গিয়েছিলেন চিত্রনায়ক রুবেল। সেদিন তাঁদের শপিং করা হয়নি। মা’র্কে’টে তাঁদের পিছু নেন অগনিত ভক্ত।

অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে, একসময় মা’র্কে’টের মধ্যে আট’কা পড়েন রুবেল। পরে পুলিশের সহায়তা নিয়ে মা’র্কেট থেকে বের ‘হতে হয়েছিল তাঁদের। এরপর থেকে আর কখনোই স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর শপিংয়ে যাওয়া হয়নি।

আশির দশকের কথা। বেশ কিছু সিনেমা মুক্তি পেয়েছে চিত্রনায়ক রুবেলের। সেগু’লো দারুণ হিটও হয়। কিছু সিনেমায় চুক্তিব’দ্ধ হয়েছিলেন। এসব সিনেমা’র কল্যাণে কিছু দর্শক তাঁকে চিনতে শুরু করেছিলেন। সে সময় ঈদের প্রস্তুতি চলছিল। এর আগে এই রুবেল প্রতি ঈদে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকা’টা করতে যেতেন। স্ত্রী তাঁর পছন্দেই কেনাকা’টা করতেন।

সেবার অবশ্য রুবেল মা’র্কে’টে যেতেও চাননি। তিনি বুঝতে পারতেন, বাইরে বের হলে অনেক দর্শক তাঁকে চেনেন। মা’র্কে’টে মানুষ তাঁদের ঘিরে ধরতে পারেন, ভিড় হবে। এ জন্য স্ত্রীর কথা চিন্তা করেই তিনি চেয়েছিলেন শপিংয়ে না যেতে। কিন্তু স্ত্রী তাঁর পছন্দ ছাড়া শাড়ি কিছুতেই কিনবেন না। বাধ্য হয়েই তাঁকে শপিংয়ে যেতে হয়।

দিনটির কথা এখনো মনে আছে রুবেলের। স্মৃ’তি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের দুই দিন আগের ঘটনা। তখন একমাত্র বড় কেনাকা’টার জায়গা ছিল নিউমা’র্কেট। আগের মতোই স্বাভা’বিকভাবেই ঘোরাঘুরি করে শপিং শুরু করেছি। কিছুক্ষণ পরে তাকিয়ে দেখি, আমা’দের পেছনে অনেকগু’লো যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমি তাদের এড়িয়ে চলছি।

আমি সাধারণ একজন রুবেল থাকার চে’ষ্টা করছি। আমা’দের ঘিরে এক ঘণ্টার মধ্যে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। মনে হয়েছিল, এখানে কোনো গন্ডগোল হয়েছে। অনেক সময় আমর’া বের ‘হতে পারছিলাম না। সেদিন বাসায় ফেরার সময় আমা’র স্ত্রী বলেছিল, আমা’র সঙ্গে আর কখনোই শপিংয়ে যাব’ে না। তারপরে আমর’া আর একসঙ্গে শপিংয়ে যাইনি।’

১৯৮৬ সালে পরিচালক শ’হীদুল ইসলাম খোকনের ‘লড়াকু’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অ’ভিষেক হয় তাঁর। প্রথম সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়। তারপর একাধিক ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তখন নিয়মিত অনেক তারকার সঙ্গেই তাঁর সিনেমা ঈদে মুক্তি পেত। একবার ঈদে পছন্দের দুটি সিনেমা একসঙ্গে মুক্তি পাওয়ায় মন খারাপ ছিল রুবেলের। তিনি জানান, ঈদ অনেক বড় উৎসব। সব সময়ই চাইতাম এই উৎসবে একটি করেই সিনেমা মুক্তি পাক। কারণ, এই সময়ে প্রেক্ষাগৃহগু’লো ভাগাভাগি হয়ে যায়।

রুবেল বলেন, ‘সেবার ঈদে “স’ন্ত্রাস” ও আরেকটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। দুটি সিনেমা নিয়ে মানসিক চাপে ছিলাম। পরে দুটি সিনেমাই খুব ভালো চলেছিল। কিন্তু এটা অনেক সময়ই প্রযোজকদের ক্ষ’তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন একবার “ডন” ও “বেয়াদব” সিনেমা একসঙ্গে রিলিজ দিতে না করেছিলাম, কিন্তু রিলিজ হয়েছিল। সেবার একটি সিনেমা ভালো চলেছিল। অন্যটি ব্যবসায়িকভাবে ক্ষ’তিগ্রস্ত হয়েছিল।

এতে প্রযোজক বড় ক্ষ’তির মুখে পড়েছিলেন। বড় উৎসব বা অন্য যেকোনো সময়ে একই তারকার একসঙ্গে একাধিক সিনেমা মুক্তি পেলে ব্যবসায়িক ঝুঁকি থাকে। এ জন্য সব সময় একটি সিনেমা মুক্তির পক্ষে ছিলাম।’

সিনেমায় কিছুটা অনিয়মিত হলেও তাঁর কারা’তে শেখানোর প্র’শিক্ষণ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় রুবেলকে। এই অ’ভিনেতা সর্বশেষ নভেম্বর মাসে মুক্তিযু’দ্ধের একটি সিনেমা’র শুটিং করেছেন রুবেল।

করোনার কারণে স্থগিত হয়ে যায় আরও একটি সিনেমা’র কাজ। এ ছাড়া আরও তিনটি সিনেমা’র কাজ পরিস্থিতি বুঝে শুরু করা হবে বলে জানান এই অ’ভিনেতা। মা’র্শাল আর্ট শিক্ষক রুবেল ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে পরপর দুবার জাতীয় কারা’তে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে স্বর্ণপদক জয় করেছিলেন।